এক শতক জমিতে যে কাঁচা মরিচ হয়েছে, তা থেকে অনায়াসে ২০-২৫ হাজার টাকা বিক্রি করা যাচ্ছে। এবার আমি মোট ২০ শতাংশ জমিতে কাঁচা মরিচ আবাদ করেছি। এখন প্রতি কেজি মরিচ ১৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছি। কাঁচা মরিচ হলো এখন কৃষকের মানিব্যাগ। কাঁচা মরিচ নয় এটা বলতে পারেন কাঁচা টাকা।’ এভাবেই নিজের অনুভূতি প্রকাশ করছিলেন পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের কুমিরামাড়া গ্রামের কৃষক জাকির হোসেন।
শুধু জাকির নয়, এলাকার অনেক কৃষকই এবার আধুনিক পদ্বতি ব্যবহার করে কাঁচা মরিচ আবাদ করেছেন। বর্ষা মৌসুমে কাঁচা মরিচ আবাদে তারা ব্যবহার করেছেন মালচিং পেপার। ফলে বেশি বর্ষায়ও গাছের গোড়ায় পানি জমে না কিংবা বেশি তাপে গোড়ার মাটি শুকিয়ে যায় না। তাই মরিচের ফলন যেমন ভালো হয়েছে; তেমনই খরচও অনেক কম হয়েছে বলে জানান স্থানীয় কৃষকেরা।
কুমিরমাড়া গ্রামের কৃষক সুলতান গাজী বলেন, ‘মালচিং পেপার ব্যবহার করে কাঁচা মরিচ চাষ করলে বেশ উপকার পাওয়া যায়। প্রথমত একবার সার দিয়ে গাছ লাগালে পরে আর সার প্রয়োগের প্রয়োজন হয় না। এছাড়া মালচিং পেপারের কারণে পোকামাকড়ের আক্রমণও কম হয়। গাছের গোড়ায় ছাড়া পুরো বেড মালচিং পেপার দিয়ে ঢেকে দেওয়ায় কোনো ধরনের আগাছা জন্মাতে পারে না। আগাছা দমনে বাড়তি খরচ করতে হয় না। ফলে উৎপাদন যেমন বাড়ছে; তেমনই ফলনও অনেক বেশি হচ্ছে। এ বছর ভালো দাম পাওয়ায় সব কৃষক লাভবান হয়েছেন। দিন দিন এ পদ্ধতিতে কাঁচা মরিচ আবাদের পরিমাণ বাড়ছে।’
এলাকায় শতাধিক কৃষক কাঁচা মরিচের আবাদ করেছেন। প্রতিদিনই তারা পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের পাশে গড়ে ওঠা পাখিমাড়ায় অস্থায়ী সবজির আড়তে কাঁচা মরিচসহ অন্য সবজি বিক্রি করছেন।
পটুয়াখালী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘নীলগঞ্জের কৃষকেরা সবজি উৎপাদনে অনেক সমৃদ্ধ। তারা জমিতে সারি সারি বেড তৈরি করে বেডের ওপর মালচিং পেপার ব্যবহার করে মরিচ আবাদ করে ভালো ফলন পাচ্ছেন। এ পদ্ধতি পুরো জেলার কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারলে কাঁচা মরিচ উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব। বর্তমানে নীলগঞ্জে যে কাঁচা মরিচ উৎপাদন হচ্ছে, তা জেলার চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হচ্ছে। কৃষি বিভাগ সব সময়ে তাদের পাশে আছে